চলে গেল প্রেমা, বেঁচে রইল না পরিবারের কেউ

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত তাসনিয়া ইসলাম প্রেমা (১৮) মারা গেছেন।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাসনিয়া মারা যান।

এ নিয়ে এই ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১। এর আগে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তাসনিয়ার বাবা-মা ও দুই বোন প্রাণ হারান। তাসনিয়ার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পরিবারটির আর কেউ বেঁচে রইল না।

একই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত শিশু আরাধ্য বিশ্বাসকে (৮) উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চমেক হাসপাতাল থেকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাধ্যকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন স্বজনেরা। আরাধ্য চমেক হাসপাতালের শিশু আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিল।

বর্তমানে চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত দুর্জয় কুমার মণ্ডল (১৮)। তিনি শিশু আরাধ্যের স্বজন।

গত বুধবার সকালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় একটি বাস ও একটি মাইক্রোবাসের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এই দুর্ঘটনায় সেদিনই ১০ জন নিহত হন। নিহতরা হলেন তাসনিয়ার বাবা ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৪৮), মা লুৎফুন নাহার (৩৭), দুই বোন আনিশা আক্তার (১৪), লিয়ানা (৮) ও স্বজন তানিফা ইয়াসমিন (১৬)। এছাড়াও নিহত হন আরাধ্যর বাবা দিলীপ বিশ্বাস ও মা সাধনা মণ্ডল। নিহত অপর তিনজন হলেন ইউছুফ আলী (৫৭), আশীষ মণ্ডল (৫০) ও মোক্তার আহমেদ (৫২)। এদের মধ্যে ইউছুফ মাইক্রোবাসের চালক ছিলেন বলে জানা গেছে।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনজন। তাদের মধ্যে আজ তাসনিয়ার মৃত্যু হলো। আহত অপর দুজনের মধ্যে দুর্জয় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং আরাধ্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার পর থেকেই তাসনিয়া সংজ্ঞাহীন ছিলেন। শুরু থেকেই তাকে চমেকের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছিল।

চমেকের আইসিইউ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘দুপুর ১২টায় তাসনিয়াকে মৃত ঘোষণা করা হয়। শুরু থেকেই তার অবস্থা ছিল সংকটাপন্ন। সময়ের সঙ্গে তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।’

নিহতদের স্বজনেরা জানান, ঈদের ছুটিতে রফিকুল-লুৎফুন দম্পতি তাদের তিন সন্তান, আত্মীয় ও রফিকুলের সহকর্মী ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দিলীপ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পর্যটন শহর কক্সবাজারে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে গত বুধবার তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন